
মুসলমানের গোটা জীবনই হতে পারে পুণ্যময়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে এমন দ্বীন দান করেছেন, যার মধ্যে মানবীয় প্রয়োজনের কোনো দিককেই অবহেলা বা উপেক্ষা করা হয়নি। আপনারা জেনে থাকবেন, কুরআনে কারীম পৃথিবীতে মানব সৃষ্টির যে উদ্দেশ্য বর্ণনা করেছে তা হল-

وَ مَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَ الْاِنْسَ اِلَّا لِیَعْبُدُوْنِ.
আল্লাহ তাআলা বলছেন, আমি মানুষ এবং জিনকে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি। তারা আমার ইবাদত করবে- কেবল এ উদ্দেশ্যেই তাদের সৃষ্টি করেছি। [সূরা যারিয়াত (৫১) : ৫৬]
তো মানুষকে সৃষ্টি করার মূল উদ্দেশ্যই যখন এই, তখন কর্তব্য ছিল, সকাল-সন্ধ্যা, দিবারাত্রি মানুষের আর কোনো কাজ থাকবে না; শুধু আল্লাহর ইবাদত করবে।
কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাঁর অসীম অনুগ্রহে মানুষ সৃষ্টির আসল উদ্দেশ্য ইবাদত হওয়া সত্ত্বেও তাকে তার মানবীয় প্রয়োজন পূরণ করারও অনুমতি দিয়েছেন। অর্থাৎ সে নিজের ও পরিবার-পরিজনের জীবনোপকরণ এবং বসবাসের চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
এ কারণে আল্লাহ তাআলা এমন এক দ্বীন আমাদেরকে দান করেছেন, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনের সকল চাহিদা পূরণ করতে পারি। শুধু প্রয়োজন পূরণ পর্যন্তই শেষ নয়, বরং এগুলোকে নেক আমলেও পরিণত করতে পারি।

হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা হতে হালাল ও পবিত্র বস্তু আহার কর এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যদি তোমরা কেবল তাঁকেই উপাস্য মানো।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৭২)
“আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষকে ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে-বুঝে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করো না।” (সূরা আল বাকারা আয়াত ১৮৮)
اَلَّذِیۡنَ یَاۡكُلُوۡنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوۡمُوۡنَ اِلَّا كَمَا یَقُوۡمُ الَّذِیۡ یَتَخَبَّطُهُ الشَّیۡطٰنُ مِنَ الۡمَسِّ ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّمَا الۡبَیۡعُ مِثۡلُ الرِّبٰوا ۘ وَ اَحَلَّ اللّٰهُ الۡبَیۡعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ فَمَنۡ جَآءَهٗ مَوۡعِظَۃٌ مِّنۡ رَّبِّهٖ فَانۡتَهٰی فَلَهٗ مَا سَلَفَ ؕ وَ اَمۡرُهٗۤ اِلَی اللّٰهِ ؕ وَ مَنۡ عَادَ فَاُولٰٓئِكَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ هُمۡ فِیۡهَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۷۵﴾
সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৭৫. যারা সুদ(১) খায়(২) তারা তার ন্যায় দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে(৩)। এটা এ জন্য যে তারা বলে(৪), ‘ক্রয়-বিক্রয় তো সুদেরই মত। অথচ আল্লাহ্ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন।(৫) অতএব যার নিকট তার রব-এর পক্ষ হতে উপদেশ আসার পর সে বিরত হল, তাহলে অতীতে যা হয়েছে তা তারই; এবং তার ব্যাপার আল্লাহর ইখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় আরম্ভ করবে তারাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।
(১) রিবা’ শব্দের অর্থ সুদ। ‘রিবা’ আরবী ভাষায় একটি বহুল প্রচলিত শব্দ। রিবা দু’প্রকারঃ একটি ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে। আর অপরটি ক্রয়-বিক্রয় ছাড়া। প্রথম প্রকার রিবা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, অমুক অমুক বস্তুর ক্রয়-বিক্রয়ে কম-বেশী করা রিবার অন্তর্ভুক্ত। এ প্রকার রিবা’কে ‘রিবাল ফাদল’ বলা হয়। আর দ্বিতীয় প্রকার রিবাকে বলা হয়, ‘রিবা-আন-নাসিয়্যা’। এটি জাহেলিয়াত যুগে প্রসিদ্ধ ও সুবিদিত ছিল। সে যুগের লোকেরা এরূপ লেন-দেন করত। এর সংজ্ঞা হচ্ছে, ঋণে মেয়াদের হিসাবে কোন মুনাফা নেয়া। যাবতীয় রিবাই হারাম।
(২) এখানে আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে, আয়াতে সুদ খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ এর অর্থ হচ্ছে সুদ গ্রহণ করা ও সুদ ব্যবহার করা, খাওয়ার জন্য ব্যবহার করুক, কিংবা পোষাক-পরিচ্ছদ, ঘর-বাড়ী অথবা আসবাবপত্র নির্মাণে ব্যবহার করুক। কিন্তু বিষয়টি খাওয়া’ শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করার কারণ এই যে, যে বস্তু খেয়ে ফেলা হয়, তা আর ফেরত দেয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। অন্য রকম ব্যবহারে ফেরত দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পুরোপুরি আত্মসাৎ করার কথা বোঝাতে গিয়ে ‘খেয়ে ফেলা’ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়। শুধু আরবী ভাষা নয়, অধিকাংশ ভাষার সাধারণ বাকপদ্ধতিও তাই। [মা’আরিফুল কুরআন]
(৩) এ বাক্য থেকে জানা গেল যে, জিন ও শয়তানের আসরের ফলে মানুষ অজ্ঞান কিংবা উন্মাদ হতে পারে। অভিজ্ঞ লোকদের উপর্যুপরি অভিজ্ঞতাও এ বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়। ইবনুল কাইয়্যেম রাহিমাহুল্লাহ লিখেছেনঃ চিকিৎসাবিদ ও দার্শনিকগণও স্বীকার করেন যে, মৃগীরোগ, মূৰ্ছারোগ, কিংবা পাগলামী বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মাঝে মাঝে জিন ও শয়তানের আসরও এর কারণ হয়ে থাকে। যারা বিষয়টি অস্বীকার করে, তাদের কাছে বাহ্যিক অসম্ভাব্যতা ছাড়া অন্য কোন প্রমাণ বর্তমান নেই।
(৪) এ বাক্যে সুদখোরদের এ শাস্তির কারণ বর্ণিত হয়েছে, তারা দুটি অপরাধ করেছেঃ (এক) সুদের মাধ্যমে হারাম খেয়েছে। (দুই) সুদকে হালাল মনে করেছে এবং যারা একে হারাম বলেছে, তাদের উত্তরে বলেছেঃ ‘ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদেরই অনুরূপ। সুদের মাধ্যমে যেমন মুনাফা অর্জিত হয়, তেমনি ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যেও মুনাফাই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। অতএব, সুদ হারাম হলে ক্রয়-বিক্রয়ও তো হারাম হওয়া উচিত’। অথচ কেউ বলে না যে, ক্রয়-বিক্রয় হারাম। এক্ষেত্রে বাহ্যতঃ তাদের বলা উচিত ছিল যে, সুদও তো ক্রয়-বিক্রয়ের মতই। ক্রয়-বিক্রয় যখন হালাল তখন সুদও হালাল হওয়া উচিত। কিন্তু তারা বর্ণনাভঙ্গি পাল্টিয়ে যারা সুদকে হারাম বলত, তাদের প্রতি এক প্রকার উপহাস করেছে যে, তোমরা সুদকে হারাম বললে ক্রয়বিক্রয়কেও হারাম বল। [মাআরিফুল কুরআন]
(৫) আল্লাহ তা’আলা তাদের এ উক্তির জবাবে বলেছেন যে, এরা ক্রয়-বিক্রয়কে সুদের অনুরূপ ও সমতুল্য বলেছে, অথচ আল্লাহর নির্দেশের ফলে এতদুভয়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য বিদ্যমান। কারণ, আল্লাহ্ তা’আলা একটিকে হালাল এবং অপরটিকে হারাম করে দিয়েছেন। এমতাবস্থায় উভয়টি কেমন করে সমতুল্য হতে পারে? হালাল ও হারাম কি কখনো এক?তাফসীরে জাকারিয়া
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, “অতঃপর সালাত শেষ হওয়া মাত্র তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়ো এবং তোমার রবের অনুগ্রহ সন্ধান করতে থাকো আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে থাকো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সূরা জুমআ, আয়াত: ১০)
“যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের ব্যবস্থা করে দেন এবং তাকে অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন।” (সূরা আত-তালাক, আয়াত ২-৩)
“আর মাপে পরিপূর্ণ দাও যখন তোমরা পরিমাপ কর এবং সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওযন কর। এটা কল্যাণকর ও পরিণামে সুন্দরতম।” (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩৫)
The Quran in everyday life গ্রন্থকার বলেন, All individual, Social, political, Finential and others problems which relating with human being, human welfare or human nature have been Completely discussed in the Quran. ‘ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সমস্যাবলী যা মানবজাতি, মানবকল্যাণ অথবা মানব প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত তার সবই পূর্ণাঙ্গভাবে আলোচিত হয়েছে আল-কুরআনে’।
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা‘আলা ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিজারাহ (ةجارة), বায়উন (بيع), শিরা (شراء) এ তিনটি শব্দ ব্যবহার করেছেন। আল-কুরআনে ৮টি স্থানে তিজারাহ (ةجارة) ৭টি স্থানে বায়‘ (بيع) এবং ১৪টি স্থানে শিরা (شراء)শব্দ উল্লিখিত হয়েছে।


🛍 Your Trusted Online Shop
All kinds of products | Best price guaranteed
✅ Cash on Delivery | 📦 Fast Delivery
হালাল ব্যবসা-বাণিজ্যঃ
নিম্নোক্ত পাঁচটি পদ্ধতিতে ব্যবসা করলে তা হালাল হিসাবে ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
(১) বায়‘উ মুরাবাহ : লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে নগদ মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ের একক ব্যবসা।
(২) বায়‘উ মুয়াজ্জাল : ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন সময়ে এক সাথে অথবা কিস্তিতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে ক্রয়-বিক্রয়।
(৩) বায়‘উস সালাম : ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন সময়ে সরবরাহের শর্তে এবং তাৎক্ষণিক উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে নির্দিষ্ট পরিমাণ শরী‘আত অনুমোদিত পণ্য সামগ্রীর অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়। আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,
قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ، وَالنَّاسُ يُسْلِفُوْنَ فِى الثَّمَرِ الْعَامَ وَالْعَامَيْنِ أَوْ قَالَ عَامَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةً. شَكَّ إِسْمَاعِيْلُ فَقَالَ مَنْ سَلَّفَ فِىْ تَمْرٍ فَلْيُسْلِفْ فِىْ كَيْلٍ مَعْلُوْمٍ، وَوَزْنٍ مَعْلُوْمٍ
‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন মদীনায় আসলেন তখন লোকেরা (ফল-ফসলের জন্য) অগ্রিমমূল্য প্রদান করত। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি অগ্রিম মূল্য প্রদান করবে সে যেন তা সুনির্দিষ্ট মাপের পাত্রের দ্বারা ও সুনির্দিষ্ট ওযনে প্রদান করে’।
(৪) বায়‘উ মুযারাবা : এক পক্ষের মূলধন এবং অপরপক্ষের দৈহিক ও বুদ্ধিভিত্তিক শ্রমের সমন্বয়ে যৌথ ব্যবসা। এ পদ্ধতিতে লভ্যাংশ তাদের মাঝে চুক্তিহারে বণ্টিত হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খাদীজা (রাঃ)-এর মূলধন দ্বারা এরূপ যৌথ ব্যবসা করেছিলেন। ছাহাবায়ে কেরাম অনেকেই এ পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন।
মুযারাবায় যে ব্যক্তি পুঁজির যোগান দেয় তাকে ছাহিবুল মাল صاحب المال বা রাববুল মাল (رب المال) এবং শ্রমদানকারী তথা ব্যবসা পরিচালককে মুযারিব (مضارب) বা উদ্যোক্তা বলা হয়। এখানে ছাহিবুল মাল-এর পুঁজি হচ্ছে ব্যবসায় প্রদত্ত অর্থ-সম্পদ আর মুযারিবের পুঁজি হচ্ছে দৈহিক ও বুদ্ধিভিত্তিক শ্রম।
মুযারাবা কারবারে লাভ হ’লে ব্যবসায় শুরুতে কৃত চুক্তির শর্তানুসারে ছাহিবুল মাল এবং মুযারিব উভয়েই উক্ত লাভ ভাগ করে নেয়। পক্ষান্তরে ব্যবসায় লোকসান হ’লে সম্পূর্ণ লোকসান কেবল ছাহিবুল মাল তথা পুঁজি বিনিয়োগকারীকেই বহন করতে হয়। আর এ ক্ষেত্রে মুযারিবের ব্যয়িত শ্রম, বুদ্ধি ও সময় বৃথা যায়। মুযারিব কোন লাভ পায় না এটাই তার লোকসান। তবে ব্যবসা পরিচালনায় মুযারিবের অবহেলা কিংবা চুক্তির শর্ত ভঙ্গের কারণে লোকসান হ’লে সেক্ষেত্রে লোকসানের দায়ভার মুযারিবকেই বহন করতে হবে। কেননা এ ক্ষেত্রে পুঁজির মালিকের কোন ভূমিকা থাকে না।
(৫) বায়‘উ মুশারাকা : মূলধন ও লভ্যাংশের ব্যাপারে দুই বা ততোধিক অংশীদারের মধ্যকার চুক্তি অনুসারে ব্যবসা।
মুশারাকা পদ্ধতিতে ব্যবসায় লাভ হ’লে অংশীদারগণ পূর্ব নির্ধারিত অনুপাতে তা ভাগ করে নেয়। আর লোকসান হ’লে অংশীদারগণ নিজ নিজ পুঁজির আনুপাতিক হারে তা বহন করে।
বাংলাদেশঃ ইসলামী অর্থনীতি ও প্রচলিত অর্থনীতির মধ্যে তুলনামূলক পর্যালোচনা
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউটের (BDRI) তথ্য অনুযায়ী দেশের ৫০ শতাংশ পরিবার বছরের কোন না কোন সময় খাদ্য সংকটে থাকে, ২৫ শতাংশ নিয়মিতভাবে সারা বছর খাদ্য পায় না, ১৫ শতাংশ পরিবার সবসময় পরবর্তী খাবার নিয়ে চিন্তিত থাকে এবং ৭ শতাংশ মানুষ কখনোই তিন বেলা খেতে পায় না।

বর্তমানে দেশের ৪০% মানুষ অতিদরিদ্র। প্রায় ২৮% মানুষ এক ডলারের কম আয়ে জীবনযাপন করছে। বিশ্বে প্রতিদিন না খেয়ে থাকে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ। অথচ উন্নত বিশ্বে প্রতি বছর খাদ্য অপচয় হয় ২২ কোটি টন। প্রচলিত অর্থনীতি এরূপ মন্দা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যা সমগ্র বিশ্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। কিন্তু ইসলামী অর্থনীতিতে এসবের স্থান নেই। যাদের পণ্য ভোগ করার সামর্থ্য নেই ইসলাম তাদের মাঝে যাকাতের অর্থ ন্যায্য বণ্টনের মধ্যে দিয়ে দারিদ্র্য হ্রাস করছে।
অর্থ-সম্পদ উপার্জনে হারাম-হালাল বিবেচনা, হালাল উৎপাদন, কর্মে নিযুক্ত থাকার নির্দেশ, আল্লাহর নির্ধারিত সীমার মধ্যে ব্যক্তিমালিকানার স্বীকৃতি, যাকাত ও ওশর ব্যবস্থার প্রবর্তন, কাপর্ণ্য ও সম্পদ পুঞ্জীভূত করার ওপর নিষেধাজ্ঞা, সুষম বণ্টন, অপচয় ও অপব্যয় পরিহার, বায়তুল মালের প্রতিষ্ঠা, সূদ-ঘুষ ও দুর্নীতি নিষিদ্ধ করা, শ্রমনীতি ও শ্রমের মর্যাদা, শোষণমুক্ত সমাজ, মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা, সমাজকল্যাণ, উত্তরাধিকার আইনের বাস্তবায়ন, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রভৃতি পন্থা বাস্তবায়নে একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসাবে বর্তমান বিশ্বে ইসলামী অর্থনীতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি মিশ্র উন্নয়নশীল অর্থনীতি, যা তৈরি পোশাক ও রেমিট্যান্সের ওপর উল্লেখযোগ্যভাবে নির্ভরশীল এবং দ্রুত বর্ধনশীল।
এটি দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা মন্দা দেখা গেছে এবং মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং খাতে সংকট, ও অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে দেশটি।
অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি:
- তৈরি পোশাক শিল্প:বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি প্রধান স্তম্ভ হলো তৈরি পোশাক খাত, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রপ্তানি আয়ের একটি বড় অংশীদার।
- প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স):বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
- কৃষি:ঐতিহ্যগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই খাতটি এখনও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে, যদিও এর উন্নত প্রযুক্তির অভাব রয়েছে।

https://at-tahreek.com/article_details/4116
https://www.facebook.com/profile.php?id=61574941060133