
কারণ:
ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ (Foot and Mouth Disease)/ Aphtho ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়। এ রোগে ৭টি ভাইরাস স্ট্রেন দ্বারা সংক্রমিত হয়। স্ট্রেনগুলো হলো- A, O, Asia-1, Sat-1, Sat-2 এবং Sat-3 ।

ছড়নোর উপায়:
এটি ট্র্যান্স বাউন্ড্রী এনিম্যাল ডিজিজ (TAD) এনিম্যাল ট্র্যাফিকিং এই ভাইরাস ছড়ানোর প্রথম উপায়। এটি সবচেয়ে বেশি ছোঁয়াচে রোগ যা বাতাসের মাধ্যমে ১০০শ মাইল পর্যন্ত ছড়াইতে পারে। এটি খাদ্য, পানি, সংস্পর্শে, পরিধানের কাপড়, গরু পরিচর্যাকারীর মাধ্যমে এ রোগ সহজেই ছড়াতে পারে। এ রোগ ৭টি ভাইরাস স্ট্রেন দ্বারা সংক্রমিত হয় এবং প্রায় সারা বছর দেখা যায় তাই ডিজিজ প্যাটার্ন এন্ডেমিক।

লক্ষণসমূহ
• শরীরে অত্যাধিক তাপমাত্রা বেড়ে যায়(১০৫°-১০৬°F) ।
• প্রথমে প্রাণির জিহ্বা, পায়ের ক্ষুরের ফাঁকে আগুনে পোড়া ফোস্কার মত ফোস্কা পড়ে ।
• পরে ফোস্কা ফেটে সেখানে ক্ষত হয় ।
• প্রাণির মুখে লালা ঝরে পড়ে তা পরে সাদা ফেনার মত দেখায় ।
• পায়ের ফোস্কা ফেটে গিয়ে ক্ষত হয়, ফলে প্রাণি কিছুক্ষণ পরপর পা ঝাড়ে ।
• প্রাণি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে ।
• প্রাণির পায়ের ক্ষতে প্রচন্ড ব্যথায় উঠে দাঁড়াতে খুব কষ্ট হয় এমনকি প্রাণি শুয়ে পড়ে ।
• মুখের ক্ষতের জন্য প্রাণি কিছুই খেতে পারে না ।
• অনেক সময় ফোস্কা মুখসহ নাকের ভিতর ও গাভীর ওলানে দেখা যায় ।
• প্রাণির দুধের উৎপাদন কমে যায় ।
• প্রাণির পায়ের ক্ষুরের ক্ষতে মাছি ডিম দিলে পোকা পড়ে, ফলে অনেক সময় পায়ের ক্ষুর দিয়ে রক্ত ঝরে এবং অনেক সময় প্রাণির ক্ষুর খুলে গিয়ে প্রাণি স্থায়ীভাবে খোড়া হয়ে যায় ।
• বয়স্ক প্রাণি কিছুদিন অর্থাৎ ১৫-১৯ দিনের মধ্যে সেরে উঠে কিন্তু তার স্বাস্থ্য একেবারে ভেঙ্গে যায় এবং পরবর্তীতে তার দুধ উৎপাদন ও প্রজনন ক্ষমতা একেবারে হারিয়ে ফেলে ।
• গাভী বাচ্চা দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যে উক্ত গাভী এ রোগ হলে তার বাছুর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ।
• রোগের জটিলতা হিসেবে বিশেষ করে ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর পশম বড় হয়ে যায় ও গরু গরম সহ্য করতে পারে না এবং ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেয় ।
• এছাড়া রোগের জটিলতা হয় অনেক গরু ও মহিষ পরবর্তীতে পায়ের ক্ষুরে ব্যথা থাকে এবং গরু বা মহিষ দ্বারা শক্ত কোন কাজ করানো যায় না ।
রোগ নির্ণয়:
- প্রাণির পায়ে ও মুখে ঘা হওয়ার লক্ষণ দেখে এ রোগ নির্ণয় করা হয় ।
- আক্রান্ত জিহ্বা, পায়ের ক্ষতের Swab নিয়ে ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করে এফ. এম. ডি রোগের RT-PCR টেস্ট এবং কোন Strain দ্বারা এ রোগ হয়েছে তা নিশ্চিত করা যায় ।
- রক্ত ইডিটিএ টিউবে নিয়ে ল্যাবে প্রেরণ করা যায়। সেরাম দিয়ে ELISA ও সরাসরি Multiplex Ab Kit টেস্ট করা যায়।


চিকিৎসা:
ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই । তবে নিকটবর্তী কোন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে গিয়ে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা করবেন। অথবা কোন অভিজ্ঞ ভেট প্র্যাক্টিশনারের কাছে যাবেন। যথেচ্ছ Antibiotics না ব্যবহার করাই উত্তম।

