***গরুর খামার ঘর তৈরির মূল বিষয়সমূহঃ
গরুর জন্য আরামদায়ক ঘর তৈরি করা মুনাফার গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
নিজের বাজেট ও জায়গার ওপর নির্ভর করে সর্বোচ্চ আরামদায়ক শেড ডিজাইন করতে হবে।
দুই সারিতে গরু রাখলে প্রতি সারিতে ৫টি গরু থাকবে, মাঝখানে হাঁটার রাস্তা থাকবে।
এক সারির খামার হলে হিসাব আরও সহজ হয়।

ঘরের আকার ও মাপঃ
গরুর মাথা থেকে পেছন পর্যন্ত জায়গা ৬-৮ ফুট, সাধারণত ৭ ফুট ধরা হয়।
সামনে খাবারের পাত্রের জন্য ২.৫ ফুট জায়গা রাখতে হবে।
পেছনে ড্রেনের জন্য ০.৫ ফুট জায়গা রাখতে হবে।
এক সারির জন্য মোট প্রয়োজনীয় জায়গা = ৭ + ২.৫ + ০.৫ = ১০ ফুট।
দুই সারির জন্য চওড়া হবে ২০ ফুট।
মাঝের রাস্তা কমপক্ষে ৪ ফুট (বা ১০ ফুট পর্যন্ত) রাখতে হবে, এখানে ৪ ফুট ধরা হয়েছে।
ঘরের মোট চওড়া = ২০ + ৪ = ২৪ ফুট।
প্রতি গরুর জন্য লম্বায় ৪ ফুট জায়গা দিতে হবে।
৫ গরুর জন্য লম্বা হবে ২০ ফুট + গেটের জন্য ৪ ফুট।
শেডের উচ্চতা সাধারণত ১০-১৫ ফুট, বড় খামারে ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত হয়।

#গরুর দাঁড়ানোর পদ্ধতি (হেড টু হেড এবং টেল টু টেল):
১.হেড টু হেড: গরু মুখোমুখি দাঁড়ায়, গোবর বাইরে পড়ে।
>খাবার দিতে সুবিধা।
>গ্যাস সমস্যা কম হয়।
>গুতোর সমস্যা কম।
>ছেড়ে গরু পালনে সুবিধা।
২.টেল টু টেল: গরুর মুখ বাইরে, গোবর ভিতরে পড়ে।
>পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পাওয়া যায়।
>গোবর-মূত্র পরিষ্কার করা সহজ।
>দুধ দোয়ার জন্য সুবিধাজনক।
>শ্বাসজনিত রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম।
>গোসল দিতে সুবিধা।
>এক ড্রেন দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করা যায়।
>অধিকাংশ আধুনিক খামারে টেল টু টেল সিস্টেমই ভালো।
>হেড টু হেড সিস্টেম প্রয়োজন হয় গরু ছেড়ে পালনের ক্ষেত্রে বা নিরাপত্তার জন্য।
#ঘরের মেঝেঃ
মেঝে পরিষ্কার করা সহজ এবং গরুর জন্য আরামদায়ক হতে হবে।
মেঝে হতে পারে-
*ইট দিয়ে সলিং (দীর্ঘস্থায়ী কিন্তু ভালোভাবে করতে হবে)
*সিমেন্ট ঢালাই (পিছলেমো সম্ভাবনা থাকে)
*মেঝে ঢালু দিতে হবে যাতে গোবর ও পানি ড্রেনে চলে যায়।
*ঢালার ঢালু গাভির জন্য প্রতি ফুট ০.২৫ ইঞ্চি, ষাড় গরুর জন্য ০.৫ ইঞ্চি।
#খাবার ও পানির হাউস (চারি):
*গরুর খাবার পাত্র খুব বেশি উচু করা উচিত না, কারণ গরু স্বাভাবিকভাবেই নিচু থেকে খায়।
*সামান্য উচু দেয়াল দিয়ে খাবার ও পানির জায়গা বানানো উচিত।
*খাবার রাখার জায়গা ফ্লোরের কাছাকাছি রাখতে হবে (প্রায় ১২-১৮ ইঞ্চি উচ্চতা)।
*প্রতি গরুর জন্য সামনে ৪ ফুট জায়গা, দুই গরুর জন্য ৮ ফুট।
*পানি ও খাবারের জন্য আলাদা বা একসাথে হাউস করা যায়।
#ঘরের চাল (ছাদ):
*ঢালাই চাল – বেশি খরচে, গরম কম দেয়।
*টিন চাল – কম খরচে, গরম বেশি হয়, শীতে ঠান্ডা লাগে।
*প্লাস্টিক চাল – মরিচা হয় না, তাপ কম, আলো ঠিকমতো আসে।
*টিন চালের নিচে ইন্সুলেশন দিলে গরম কমানো যায়।
#ওয়াল ও সুরক্ষা ব্যবস্থাঃ
*ঘরের চারপাশে সাধারণত ২.৫ থেকে ৩ ফুট ওয়াল দেয়া হয়।
*উপরে টিন বা নেট দিয়ে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা যায়।
*শীতে গরুর আরাম রাখতে যথেষ্ট বায়ু চলাচল থাকা প্রয়োজন।